প্রতিদিন অনলাইনে বিভিন্ন রকম এর পোস্ট দেখা যায়। আর বর্তমানে শিক্ষা নিয়ে তো আরও অনেক পোস্ট ফেসবুকে অহরহ।লকডাউন দেওয়ার পর থেকে সবাই শিক্ষাকে এড়িয়ে চলার চেস্টা করছে।অনেকে বিভিন্ন ফানি পোস্ট দেন শিক্ষার ব্যাপারে।
বিষয়টা এমন দাড়াচ্ছে যে, পড়ালেখা না করতে পারলেই সবাই বাচেঁ।কিছুদিন আগে আমার চোখে একটি পোস্ট পরলো যেখানে শিক্ষাকে একটি চিঠি দিয়ে জানালেন যে- পড়ালেখা ছাড়া সে খুবই ভালো আছেন এবং সে চান না যেনো শিক্ষা তার জীবনে আর ফিরে আসুক।যদিও ফানি পোস্ট কিন্তু অনেকের মনের কথাও বটে।সে যাই হোক,আমি সেই পোস্ট থেকে ইন্সপায়ার হয়ে শিক্ষাকে একটা চিঠি লিখতে চাই।
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি ভালোই আছো।আমিও ভালো আছি।লকডাউন এর জন্য তুমি আমাদের থেকে খুবই দুরবর্তী অবস্থানে আছো।খুবই ভালো লাগছে যে তুমি আমার আশে পাশেও নেই।তোমার জন্য জীবনে কতইনা মার খেলাম,বকা শুনলাম। বাবা,মা,শিক্ষক ও সবার থেকে গাল মন্দ শুনেছি।
তোমাকে ঠিক মতো গুরুত্ব না দিলে পারা-প্রতিবেশিরা অনেক খোচামূলক মন্তব্য করতেন।মনে মনে শুধু এইটাই কামনা করতাম যে তুমি না থাকলেই আমি বাঁচি।এখন এই লকডাউনে সরকার তোমাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিষ্কার করেছেন।এখন তুমি নেই।আমার তো মনে আনন্দ আর ধরে না।চলে যখন গেছো আর যদি ফিরে না আসো তাহলেই খুশি হই।
যদিও আমার এইরকম একটা অনুভূতি হওয়ার কথা।কিন্তু নির্মম সত্যি এই যে,আমি তোমাকে ছাড়া একদম ভালো নেই।কেন যেন একটা গভীর শূন্যতা কাজ করছে আমার মধ্যে।
জীবনের সব চেয়ে বেশি সময় তোমার জন্যই কাটালাম একটি প্রাঙ্গনে।এই যে এতো বন্ধু,এতো মানুষের সাথে একটি প্রাঙ্গনে কাটানো এটাতো তোমার জন্যই। তুমি না থাকলে এতো কিছু কিভাবে পাওয়া হতো??
তোমার থেকেই তো সকল বিষয়ে জ্ঞানার্জন। এমনকি যে প্রিয় মানুষটির জন্য এতো যুদ্ধ করে একটি চাকরির খোজ করা,এই চাকরি অব্ধি যাওয়া তো তোমার কারনেই।
তোমাকে এতো বছর নিজের মধ্যে ধরে রেখেছি এতো কষ্ট সহ্য করে।তোমাকে অসহ্য লাগার পর ও তোমার দুরত্ব আমাকে গভীর শোকে পতিত করছে।একজন নারী যখন নিজের যোগ্যতা সবার সামনে তুলে ধরতে চায় তখন আসল গুরুত্বটা যে তোমার।
নারী তার পুর্ণ মর্যাদা তোমার উপর ভর দিয়েই যে অর্জন করে।এই বিজ্ঞানের পৃথিবীতে যে আলোর সন্ধান তা তোমার জন্যই পাওয়া।আমার সকালের শুরু টা তোমাকে দিয়ে শুরু হয়।শুধু তাই নয়।রাতের শেষ টাও তোমাকে দিয়েই হয়।
তাহলে কেন আজ তুমি অবহেলিত বর্তমান যুবক সমাজের কাছে?কেন তোমার গুরুত্ত্ব এই যুবক সমাজ বুঝতে পারছে না?নাকি তারাই বুঝতে চাইছে না?তারা বুঝুক বা না বুঝুক।তুমি তো বুঝতে পারো যে একমাত্র তুমিই আমাদের জাতির মেরুদণ্ড।
তুমিহীনা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্ধকারের মায়াজালে জড়িয়ে পেচিয়ে নিজেদের ধ্বংস করে দিবে।আমরা তোমাকে না চেয়েও অনেক বেশি চাই।এতটা বেশি চাই যে আমরা নিজেরাও বুঝতে পারি না আমরা শিক্ষায় বাঁচি।আমরা বুঝতে পারি না শিক্ষা আমাদের বাচাঁয়।শিক্ষা ছাড়া আমরা অচল।
শিক্ষা ছাড়া আমাদের সমাজের একজন মুর্খ ব্যক্তিও অসহায়।আজকের বিশ্ব কি তোমাকে ছাড়া দু’কদম চলতে পারবে?পারবে না।তাহলে যুবক সমাজ কোন অহংকারে তোমার থেকে মুক্তি চেয়ে নিজেকে ধ্বংস্তূপে পরিনত করতে চাচ্ছে?
শিক্ষা,আমরা তোমার কাছে ঋণী।তুমি ক্ষনিকের জন্য বহিস্কৃত হলেও তোমার ফিরে আসার কামনায় রয়েছি।শুধু আমি নই।এই গোটা বিশ্বের সকলের কামনা।
তুমি ফিরে এলে আমরা আমাদের প্রাপ্য পাবো।আমি চাই তুমি তোমার জ্ঞানের আলো সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দাও।যাতে আগামী দিনের মেরুদণ্ড বাকা নয় বরং সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকে।
ইতি,
এক শিক্ষাপ্রেমী।
(শিক্ষাকে নিয়ে ঠাট্টা না করে শিক্ষার গুরুত্ব দিতে শিখ,যুবক সমাজ।কারন তোমরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।আর তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ শিক্ষাকে সম্মান করার মধ্যেই বিদ্যমান।)
সমাপ্ত………..
আরো লিখা পড়ুনঃ সমীকরণ
ফেসবুকে আমরাঃ আমাদের ভোলা
আপনার ফেসবুক আইডি থেকে কমেন্ট করুন