আমি আসবো কোন এক বিকেলে শিশিরজলের স্পর্শ মেখে যখন ঘাস গুলো সজীব হয়ে থাকবে। আমি আসবো, তখন হয়তো সূর্য মিষ্টি আলোর ধারা ছড়িয়ে দিবে প্রকৃতির চারপাশ। হালকা বাতাসে বাঁশঝাড় ধুলে উঠবে, খসখসে শব্দে শুকনো পাতার ধ্বনি হবে তখন- আমি আসবো। আমার আসার আগাম বার্তা পৌছে দিবে বিকেলের দোয়েল, বুঝবে আমি আসছি।
মুনিয়া মুনের ভিন্ন একটি প্রবন্ধ পড়তে ক্লিক করুন- প্রিয়জন- মুনিয়া মুন
জোড়া শালিকের হাট বসবে গাছের ডালে ডালে, মুখরিত হবে চারপাশ পাখির গানে। সে এক মধুর কিচিরমিচির গান,তখন ই আসবো। আমি আসবো, তখন ধমকা হাওয়া নয়, মৃদু হাওয়া ধানের ক্ষেতে ঢেউয়ের খেলা দিয়ে যাবে। কচি ধানের ডগায় থাকবে বিন্দু বিন্দু শিশির কনার জল, ছুঁয়ে দিলেই হাত ভিজে যাবে জলে তখন আসবো আমি।
ছোট কোলাব্যাঙ ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ডাকবে, বিরক্ত হইয়ো না সেই ডাকে কারন তখন ই যে আসবো আমি। তখন কোন বসন্ত কাল নয়, বর্ষার শেষে শরতের আগে কোন এক পরন্তু বিকেলে আমি আসবো। বৃষ্টির আসার সম্ভাবনা থাকতে পারে, কারন সেটা বর্ষার সমাপ্তির বৃষ্টির বিকেলে আমি আসবো। শিউলি আর কাশফুল সবে মাত্র ফুটতে চলেছে, এখনো কলি আর ফোটন্ত অবস্থায় ঠিক তখন ই আমি আসবো।
জনমানব শূন্য কোনো এক পুরনো খেলার মাঠ, দুইপাশে বিল আর এক পাশে খাল; আরেকপাশে গ্রামের মেঠো পথ জোড়া এক মাঠে আমি আসবো ই। খালে থাকবে তখন জোয়ারের কলকল শব্দ, কিছু হাসের বাচ্চা সাতরে পাড় হতে যাবে খাল ঠিক তখন ই আমি আসবো। আমি আসবো সেই পলিমাটির পরন্তু বিকেলের মাঠে, যখন কেউ থাকবে না থাকবে শুধু একটি অস্তিত্ব আর নিশ্বাসবন্ধ উত্তেজনা।
হঠাৎ করেই আকাশের ঈশান কোণে জমবে মেঘ, হালকা বাতাস হবে চুল সরে যাবে, অনায়াসে ভাবো আসছি আমি। নুপুর এর শব্দ শুনছো কি? এইটাই সেই সময় যখন মেঘ,পাখি, ঘাস, শিশির জলের রেখা, বাতাস একসাথে সব কিছু আগমনকারীর পথ চেয়ে অপেক্ষায় ছিল, দেখো আমি আসছি। চিনতে কি পারছো ? নীল রং শাড়ি, হাতে নীল চুরি, খোলা চুলের এক চিলতে খোপায় রক্তজবা ফুল আর খালি পায়ের নুপুর পরা অচেনা সেই মেয়েটি আমি।
আমি এসেছি, হ্যাঁ আমি এসেছি যে আসার অপেক্ষায় আমি ছিলাম দীর্ঘ সময় ধরে, আমি আসবো বলে । আজ অপেক্ষার দিন শেষ, হ্যা শেষ কারন আমি এসেছি।
আপনার ফেসবুক আইডি থেকে কমেন্ট করুন